ভারতীয় উল্লেখযোগ্য ভ্রমন স্থান কাজিরাঙ্গা
- ইয়াসিন প্রধান সাজিদ
- এপ্রিল ১, ২০২১
ভারতীয় উল্লেখযোগ্য ভ্রমন স্থানসমূহের মধ্যে প্রথম তালিকার নামগুলোর মধ্যে একটি হলো কাজিরাঙ্গা জাতীয় উদ্যান। এটি একটি ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান। কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যান ভারতের আসাম রাজ্যের গোলাঘাট ও নগাও জেলায় অবস্থিত জাতীয় উদ্যানের বিশেষত্বের মধ্যে একটি হলো বিশ্বের একশৃঙ্গ গন্ডারের দুই-তৃতীয়াংশ এই জাতীয় অরণ্যে বাস করে। কাজিরাঙায় একটি সংরক্ষিত অঞ্চল আছে। এই অঞ্চলে বেঙ্গল টাইগারের ঘনত্ব বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।
কাজিরাঙ্গা নামের উৎস সম্বন্ধে নিশ্চিত কোন তথ্য পাওয়া যায় নি। একটি জনশ্রুতি অনুযায়ী কাজি নামের কার্বী জেলার এক তরুণ পার্শ্ববর্তী গ্রামের রাঙ্গা নামের এক তরুণীকে ভালবাসত। কিন্তু তাদের পরিবার তাদের এ ভালবাসা মেনে নেয় নি। তারা দু'জনে মিলে জঙ্গলে পালিয়ে যায়। তাদের আর কখনও দেখা যায় নি। তাদের দু'জনের নামানুসারে বনের নাম রাখা হয় কাজিরাঙ্গা। তাছাড়াও এই উদ্যান নিয়ে বড় বড় মনীষি রা অনেক মন্তব্য করে গেছেন। এই কাজিরাঙ্গা জাতীয় উদ্যানে প্রচুর হাতি, বন্য জলমহিষ ও বারশৃঙ্গার পাওয়া যায়।
আরো পড়ুনঃ পাকন পিঠা রেসিপি
তাছাড়াও এই উদ্যানে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি সংরক্ষণ করা হয়ে থাকে বলে বার্ডলাইফ ইন্টারন্যাশনাল থেকে এই জাতীয় উদ্যানটিকে "গুরুত্বপূর্ণ পক্ষীক্ষেত্র" বলেও ঘোষণা করা হয়েছে। উল্লেখিত এই বিষয়াদি ছাড়াও এই কাজিরাঙা উদ্যানের আরও অনেক আকর্ষনীয় দিকসমূহ রয়েছে। এজন্যেই মূলত ভারতের অন্যান্য সংরক্ষিত বনাঞ্চলের তুলনায় বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে কাজিরাঙার সাফল্য তুলনামূলকভাবে বেশি।
কাজিরাঙ্গা জাতীয় উদ্যান পূর্ব হিমালয় বায়োডাইভারসিটি হটস্পটের সীমান্তে অবস্থিত বলে এই উদ্যানে বহু বিচিত্র প্রজাতির সমাগম দেখা যায়। কাজিরাঙায় গেলে ঐখানে ছন জাতীয় ঘাস ও জলাভূমি প্রচুর পরিমাণে দেখা যায়। উদ্যানের নিরক্ষীয় আর্দ্র দীর্ঘপত্র অরণ্যটি বেশ গভীর।৷ ব্রহ্মপুত্র নদ সহ চারটি নদী এই বনের মাঝখান দিয়ে গিয়েছে। এত অপরুপ এই স্থান কাজিরাঙাকে নিয়ে অনেক বই ও গান লেখা হয়ে গেছে ইতিমধ্যেই ।
এই বনের উপর অনেক তথ্যচিত্রও তৈরি হয়েছে। মূলত ১৯০৫ সালে সংরক্ষিত বনাঞ্চল হিসেবে এই উদ্যান স্থাপিত হয়েছিল। পরে ২০০৫ সালে এসে, এই উদ্যানের শতবর্ষ উদযাপিত হয়। কাজিরাঙ্গার ভূমি অনেক উর্বর। শত শত বছর ধরে ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনে এবং এর প্রবাহিত পলি জমে কাজিরাঙ্গার ভূমি সৃষ্টি হয়েছে। আরও সৃষ্টি হয়েছে বন্যাবাহিত বিস্তীর্ণ জলাশয়। কাজিরাঙ্গার মোট এলাকার পাঁচ শতাংশ দখল করে আছে এসব বিল। এছাড়াও কাজিরাঙ্গার কিছু উচ্চভূমি রয়েছে যেগুলোকে স্থানীয়ভাবে চাপরি বলা হয়ে থাকে। ভারী বন্যার সময়ে পশুপাখি এসব চাপরিতে এসে আশ্রয় নেয়। তবে শুষ্ক মৌসুমগুলোতে বন্যপ্রাণীদের খাদ্যের প্রচণ্ড অভাব দেখা দেয়।
আরো পড়ুনঃ কাঁচা পেঁপের সুস্বাদু হালুয়া
আফ্রিকা ছাড়া পৃথিবীর কয়েকটি জায়গায় বিড়ালজাতীয় প্রাণীদের একসাথে দেখতে পাওয়া যায়, কাজিরাঙ্গা তাদের অন্যতম। কাজিরাঙ্গা হলো একই সাথে চিতাবাঘ ও বাংলা বাঘের নিরাপদ বাসস্থান। ২০০৬ সালে কাজিরঙ্গাকে ব্যাঘ্র সংরক্ষণ ক্ষেত্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। সারা পৃথিবীতে কাজিরাঙ্গায় বাঘের ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি।
তথ্যঃ গুগল