‍‍`যন্তর মন্তর‍‍` ভারতের বিশাল মানমন্দির

  • ওমেন্স কর্নার ডেস্ক
  • এপ্রিল ৬, ২০২১

যন্তর মন্তর, শব্দটির সাথে শিশুকাল, আনন্দ আর কেমন একটা অনুভূতি মিশে থাকে। কিন্তু যখন জানা যায় যন্তর মন্তর এর নামে একটি পর্যটন কেন্দ্র আছে, তখন ঐ স্থানটি নিয়ে মনের ভিতর কেমন কৌতুহুল সৃষ্টি হয়। আমাদের সবার অবশ্যই সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’ সিনেমার কথা মনে থাকার কথা? সিনেমাটিতে আমরা দেখতে পাই অত্যাচারী রাজার নির্দেশে বিদ্রোহীদের পাঠানো হতো যন্তর মন্তর কক্ষে যেখানে তাদের মগজ ধোলাই করে শেখানো হতো ‘যাবে যদি যাক প্রাণ, হীরকের রাজা ভগবান!’

তবে বাস্তবের ‘যন্তর মন্তর’ হলো ভারতের জয়পুরে অবস্থিত একটি বিশাল মানমন্দির, যাতে রয়েছে একটি সূর্যঘড়ি। পৃথিবীর অক্ষের সাথে অতিভুজীয় সমান্তরালে নির্মিত এই ঘড়িটি সার্বক্ষণিকভাবে দিনের সঠিক সময় বলে যাচ্ছে কয়েকশ’ বছর ধরে। জয়পুর এর যন্তর মন্তর স্মৃতিস্তম্ভটি জ্যোতিৰ্বিজ্ঞান এর যন্ত্ৰ স্থাপত্যের একটি সমষ্টি। জানা যায় ১৭২৭ সাল থেকে ১৭৩৪ সালের মধ্যবৰ্তী সময়ে মহারাজা দ্বিতীয় জয়সিংহ জয়পুরে যন্তর মন্তর নিৰ্মাণ করেছিলেন। তিনি এই ধরনের পাঁচটা স্থাপত্যনির্মাণ করেন পাঁচটা ভিন্ন ভিন্ন স্থানে।

আরো পড়ুনঃ আপনার প্রিয় সন্তানের উচ্চতা বাড়ানোর সহজ ৬টি কৌশল!

তার মধ্যে দুটি নির্মাণ দিল্লি এবং জয়পুর এ অবস্থিত। এগুলো থেকে জয়পুর মানমন্দিরটি ছিল বৃহত্তম এবং এখানে তিনি ২০টি স্থায়ী যন্ত্ৰ স্থাপন করেছিলেন। তবে পুরো ভারতজুড়ে পাঁচটি যন্তর মন্তর স্মৃতিস্তম্ভ আছে। এগুলো জয়পুর, নয়া দিল্লী, উজ্জাইন, মথুরা এবং বানারসে অবস্থিত। এদের মধ্যে সবচেয়ে বড় মানমন্দিরটি রাজস্থানের জয়পুরে অবস্থিত। জয়পুরের মানমন্দিরটিতে ২০টিরও বেশি যন্ত্রপাতি রয়েছে, যার মধ্যে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সূর্যঘড়ির কথা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এই সূর্যঘড়িটি আরেকটি নাম ‘বৃহৎ সম্রাট ইয়ন্ত্র’ নামেও অনেক জায়গায় পরিচিত যা সময় নিরূপণের ক্ষেত্রে কখনো দুই সেকেন্ডের বেশি হেরফের করে না।

সব মিলিয়ে এই বিস্ময়কর ভাস্কর্যটিকে ইউনেস্কো কর্তৃক ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট’ হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে। প্রতি বছর অসংখ্য পর্যটক ভারতে আসেন এই যন্তর মন্তর নামক মানমন্দিরগুলো দেখতে। তবে জয়পুর আর নয়াদিল্লীতেই অবশ্য ভিড়টা একটু বেশি থাকে। আদিকালেই যখন এগুলো তৈরী করা হচ্ছিল, সে সময়ে দূরবিন সহ অন্যান্য যে আধুনিক যন্ত্র ইউরোপে প্রবর্তিত হতে শুরু করেছিল, সেগুলোর সাহায্য ছাড়াই নির্মিত এই মানমন্দিরটি গ্রহ-নক্ষত্র সম্বন্ধে পুঙ্খানুপুঙ্খ ও বেশ সঠিক তথ্য দিয়ে যাচ্ছে বিগত প্রায় ৩০০ বছর ধরে।

আরো পড়ুনঃ হার্টের সমস্যা দূর করতে নিয়মিত মাছ খেতে হবে, বলছে গবেষণা

এই মানমন্দির ১৭১০ সালে নির্মিত হয়েছে বলে জানা যায়। তবে পরবর্তী গবেষণা থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, এর কাজ ১৭২৪ সালে সম্পূর্ণ হয়েছিল। এই মানমন্দিরের প্রধান আকর্ষণ হলো বিভিন্ন যন্ত্র, যেগুলোকে বিশ্বে এ ধরনের যন্ত্রগুলোর মধ্যে সবচেয়ে পুরনো বলে মনে করা হয়। অন্যান্য অপরুপ পর্যটনকেন্দ্র থেকেও এই পর্যটন কেন্দ্রটি একটু বেশি আকর্ষিত করে শুধুমাত্র এই আশ্চর্য যন্ত্রগুলো। এজন্য পর্যটকরা একটু কৌতুহুল নিয়ে এই যন্তর মন্তর দেখার আগ্রহ প্রকাশ করে থাকে।

তথ্যঃ গুগল

 

এ সম্পর্কিত আরও পোস্ট

Leave a Comment