আগ্রা ফোর্ট
- ইয়াসিন প্রধান সাজিদ
- এপ্রিল ১৮, ২০২১
ভারতের একটি আকর্ষনীয় এবং দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা হলো আগ্রা ফোর্ট। আগ্ৰা দুর্গ রাঙা বেলেপাথরের তৈরি। দেখতে চমৎকার এবং ঐতিহাসিক একটি স্থাপনা এই আগ্রা ফোর্ট বেশ আকর্ষনীয় দর্শকদের কাছে। আগ্ৰা দুর্গ বা আগ্ৰার লালকেল্লা নামক নিদর্শনটি ভারতীয় উপমহাদেশের শাসক মোঘল রাজবংশের রাজকীয় আবাস্থাল এবং মোগল স্থাপত্যের এক অনবদ্য নিদৰ্শন। আগ্রার লালকেল্লাটি ১৯৮২ সালে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসাবে ৩ নং বিভাগে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের অন্তৰ্ভুক্ত হয়।
দুৰ্গটি ভারতের উত্তর প্রদেশের আগ্রার যমুনা নদীর তীরে অবস্থিত। মোগল স্থাপত্যের অন্যতম আরেকটি বিখ্যাত নিদৰ্শন তাজমহল আগ্ৰা কেল্লা থেকে মাত্ৰ ২.৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। আগ্রার লালকেল্লা দুৰ্গটির প্রাঙ্গণের আয়তন ২.৫ কি.মি.। আগ্রা দুৰ্গটির অভ্যন্তরে অনেক প্ৰাসাদ, মিনার এবং মসজিদ আছে। তথ্যমতে এসব দুর্গ এবং ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলো ষোড়শ শতাব্দী থেকে অষ্টাদশ শতাব্দীর প্ৰথমাৰ্ধের মধ্যবৰ্তী সময়ে নিৰ্মিত হয়। এই সকল দুর্গগুলোর নিৰ্মাণকাৰ্য ষোড়শ শতাব্দীতে আকবর এর রাজত্বকালে আরম্ভ হয় এবং অষ্টাদশ শতাব্দীতে ঔরঙ্গজেব এর রাজত্বকালে শেষ হয়।
আরো পড়ুনঃ ৩০-এরপরে বাচ্চা নিলে আপনি যে যে সমস্যাগুলোর মুখোমুখী হবেন!
তবে সব স্থাপনাগুলোর নির্মানকালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী তথ্যমতে জাহাঙ্গীর এবং শাহজাহান এর রাজত্বকালে দুৰ্গের বহু নতুন স্থাপনা নিৰ্মিত হয়েছিল। আগ্রা দুৰ্গতে আকর্ষনীয় এবং উল্লেখযোগ্য দৰ্শনীয় স্থানসমূহ হল - খাস মহল, শীশ মহল, মুহাম্মান বুৰ্জ, দেওয়ান-ই-খাস, দেওয়ান-ই-আম, মোতি মসজিদ এবং নাগিনা মসজিদ। এই স্থাপনাসমূহে 'তিমুরিদ পারসিক' শিল্পকলা এবং 'ভারতীয় শিল্পকলা'র এক আশ্চৰ্য মিশ্ৰণ পরিলক্ষিত হয়। মূলত দর্শকদের কাছে এই স্থাপনাগুলোই বেশি আকর্ষন করে এবং দেশ বিদেশের সবার কাছে এই স্থাপনা গুলো বেশ পরিচিত। ১৫৫৮ সালের দিকো সম্রাট আকবর আগ্রায় রাজধানী স্থানান্তর করেন।
আবার ঐতিহাসিক আবুল ফজল সেই সময়ের দুর্গকে বাদালগড় হিসাবে আখ্যায়িত করেছেন। আগ্রা দুর্গের অন্যতম আকর্ষন নির্মাণ উপাদান বেলে পাথর সম্রাট আকবরের রাজাস্থানের আরাউলি থেকে সংগ্রহীত ছিল। আর সম্রাট আকবর এই বেলেপাথর দিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ দুর্গটির সংস্কার সাধন করেছিলেন। দুর্গটির ভিতরের অংশে ইটের গাঁথুনি আর বাইরের অংশে আছে বেলেপাথরের আস্তরন। প্রায় ৪ হাজার কর্মী ৮ বছর প্রতিদিন পরিশ্রম করে ১৫৭৩ সালে আগ্রা দুর্গের নির্মাণ কাজ সমাপ্ত করেছিল। সম্রাট আকবরের পৌত সম্রাট শাহজাহানের আমলে আগ্রা দুর্গ নতুনভাবে সংস্করণ হয়। আর দুর্গের বর্তমান রূপ ওই সংস্করণের কাজ।
আরো পড়ুনঃ কাঁচা ছোলা খাওয়ার পর যে দু`টো জিনিস কখনোই খাবেন না!
শাহাজাহান লাল বেলেপাথরের নির্মিত ইামারতের চেয়ে স্বেত পাথর দ্বারা নির্মিত ভবন অধিকতর পছন্দ করতেন। তাই ঐভাবেই দুর্গের সংস্করণ করিয়েছিলেন। এরপর বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন উপায়ে মারাঠা ও তাদের শত্রুরা আগ্রা দুর্গের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করে। ১৭৬১ সালে আহমেদ শাহ আবদালি পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধে মারাঠাদের পরাজিত করে। কিন্তু আবার পরবর্তীতে ব্রিটিশ এই দুর্গটি দখলে নিয়ে নেয়। তারপরেও আরও কয়েক দফা দখল আর যুদ্ধ শেষে দেশের সাথে সাথে এই আগ্রা ফোর্ট স্বাধীন হয় এবং এই স্থান এখন দেশের অন্যতম এক আকর্ষন এবং পর্যটকদের পছন্দের একটি নিদর্শন।
তথ্যঃ গুগল