সুইজারল্যান্ড সম্পর্কে বিস্তারিত!
- ইয়াসিন প্রধান সাজিদ
- এপ্রিল ১৯, ২০২১
ছোট বড় ধনী গরিব প্রত্যেকটা মানুষের মনেই পৃথিবী ঘুরে দেখার স্বপ্ন বিরাজ করে। যদি প্রশ্ন করা হয় যে কোন দেশটি আপনি সবার প্রথম ঘুরতে চান! তাহলে আমার মতে সবার একই উত্তর থাকবে আর সেটা হলো " সুইজারল্যান্ড"। ফ্রান্স, ইতালি, জার্মানি আর অস্ট্রিয়ায় ঘেরা স্বপ্নের এই দেশটি আল্পস পর্বতমালার দেশ।
শুধু বরফে মাখা পর্বতরাজীর চূড়াই নয়, সুইজারল্যান্ডে আছে টলটলে নীল পানির হ্রদ, বিশাল সবুজের কার্পেটে মোড়ানো দুর্দান্ত সব ভ্যালি আর রুপকথার গল্পে পাওয়া হ্রদের দারুণ সব পাড়ের সৌন্দর্য। সুইজারল্যান্ড দেশটি চারটি দেশের কোলে প্রকৃতির নিজ হাতে গড়া। এই দেশে ঘুরতে এলে মনে হবে শুধু একটি দেশ ঘুরা মানেই কয়েকটি দেশের সৌন্দর্য একসাথে উপভোগ করা। এত বৈচিত্র্য, এত সৌন্দর্যের মাঝে সুইজারল্যান্ডের সংস্কৃতিও নজর কাড়ার মতো।
আরো পড়ুনঃ সঠিকভাবে শিশুকে ডায়াপার পরানো এবং তার তলদেশের যত্ন!
ইতিহাসের পাতা উল্টালে সুইজারল্যান্ডের জুরিখ, জেনেভা, লুস্যান আর এর রাজধানী বার্নের ঐতিহাসিক সংস্কৃতি চোখে পড়বে সবার আগে। মূলত এই স্থানগুলো বেশিরভাগ পর্যটকদের পছন্দের জায়গা এবং পরিচিত স্থান। তাই সুইজারল্যান্ড মানেই এই স্থানগুলো অবশ্যই নিজের মনে গেথে নেয়া। সুইজারল্যান্ডের আলপ্স পর্বতমালার উচ্চতম কিছু শৃঙ্গের মধ্যে “দ্যা ম্যাটারহর্ণ” অন্যতম।
স্থানটি সুইজারল্যান্ড-ইতালি সীমান্তে অবস্থিত আর এই পর্বতের শ্বাসরুদ্ধকর সৌন্দর্য সকল পর্যটকদের রাতের ঘুম কেড়ে নিতে সক্ষম। প্রায় ৪,৪৭৮ মিটার মানে প্রায় সাড়ে তের হাজার ফুট উঁচু এই পর্বতের শৃঙ্গে ওঠার শখ মানুষের সেই আদিকাল থেকেই। আর এই বিশাল শৃঙ্গ জয় করতেও কিছু পর্যটক পাড়ি জমায় সুইজারল্যান্ডে। ম্যাটারহর্ণের ঠিক নিচেই আছে “জারম্যাট” নামে ছোট গোছানো এক গ্রাম যেখানে পরিবেশ ঠিক রাখতে সকল প্রকার মোটরচালিত যানবাহন নিষিদ্ধ করেছে সুইজারল্যান্ড সরকার। পর্যটকদের সুবিধার্থে আরো আছে দারুণ কিছু রিসোর্ট আর অসাধারণ সব রেস্টুরেন্ট। সম্পূর্ণ ইউরোপের মধ্যে উচ্চতম স্থান হিসেবে পরিচিত জাংফ্রাউযখ মূলত একটি হিল স্টেশন জাতীয় জায়গা। সুইজারল্যান্ডের বার্নিজ ওবারল্যান্ডের সবচেয়ে জনপ্রিয় রেলভ্রমণ হচ্ছে জাংফ্রাউযখ পর্যন্ত রেলভ্রমণটি।
আরো পড়ুনঃ নিয়ন্ত্রনহীন প্রসাব এর জটিলতা
সকল পর্যটকরাই বেশ আনন্দের সাথে এই রেলভ্রমণটি উপভোগ করে এবং নিয়ে যায় সুইজারল্যান্ডের রেল ভ্রমণের সুখময় ইতিহাস। পৃথিবীতে অবস্থিত ছোট একটি স্বর্গের অংশ সুইজারল্যান্ড। তার পশ্চিমে থুন হ্রদ আর পূর্বে ব্রিয়েঞ্জ হ্রদের কোলে অবস্থিত সুইজারল্যান্ডের অন্যতম ভ্রমণাকর্ষণের নাম ইন্টারলেকেন। ইন্টারলেকেনে আছে প্রায় ৩৫ একরের মতো খোলা জমি যেখান থেকে দেখা যায় আইগার, মঞ্চ, জাংফ্রাউয়ের মতো দারুণ কিছু পর্বতশৃঙ্গ। এখানে সময়ে সময়ে বেশ ভিড় জমে উঠে পর্যটকদের। বিশাল জায়গা থাকায় সবার অবস্থানে স্থানটিতে বেশ উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। পাহাড়ে কোলে টলটলে নীল পানির বিশাল এক হ্রদ, হ্রদের পাশে গড়ে ওঠা মোটরবাইকবিহীন পরিষ্কার আকাশের অলিগলি, ঐতিহাসিক ভবনে ভরপুর এক শহর।
কি সুন্দর এক দৃশ্য হবে ভেবেই কেমন একটা অদ্ভূত সৌন্দর্য মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। এই রুপকথায় মতো সুন্দর স্থানটির দেখা মিলে সুইজারল্যান্ডের লুসার্নি তে। সুইজারল্যান্ড আর ফান্সের সীমান্তে ছোট শহর জেনেভা। এমনিতেই অন্যরকম সুন্দর শহর জেনেভা,তার উপর বিশ্বের সবচেয়ে বড় আল্পাইন হ্রদও যে জেনেভারই দখলে। লেকটিকে শহরের নামেই নামকরণ করা হয়, নাম লেক জেনেভা। আর এ লেকে বিভিন্ন কাপলের উপস্থিতি দেখা যায় বিকাল জুড়ে। আবার বিভিন্ন উৎসবে। সুইজারল্যান্ড এর রাজধানী ঘুরে দেখার মতো অনন্য একটি জায়গা।
সুইস রাজধানী বার্নের বুকে বয়ে চলা “এরে নদী” আর পুরো শহরের একটা পুরাতন বিশ্বভাব এই শহরের প্রেমে পড়তে যথেষ্ট। প্রচুর জাদুঘর আর চিত্রকর্মের গ্যালারিতে সমৃদ্ধ বার্ন শহরটি সকল পর্যটকদের কাছে খুবই পছন্দের এক জায়গা। যেখানে প্রায়ই প্রদর্শনী অনুষ্ঠান হয়ে থাকে আর সেখানে বিভিন্ন চিত্রপ্রেমীদের দেখা যায়। সুইজারল্যান্ডের সবচেয়ে বড় শহর হলো জুরিখ।
আরো পড়ুনঃ রাতে শিশুর ডায়াপার বদলানোর ঝামেলা থেকে মুক্তির টিপস!
জুরিখ সুইস পরিবহন জগতে অনন্য এক নাম। লিম্মাত নদীর অববাহিকায় তৈরী হওয়া লেক জুরিখের তীরে দাঁড়িয়ে থাকা বিশাল এই শহর সুইজারল্যান্ডের পর্যটকদের পছন্দের একদম শীর্ষে। আর কোথাও ভ্রমণ হোক বা না হোক। সুইজারল্যান্ডে পা রাখা প্রত্যেক টা মানুষ একবার হলেও এ শহরে চোখ মিলিয়ে নেয়। প্রতি বছর প্রচুর পর্যটক ঘুরতে যায় সুইজারল্যান্ড, রেখে আসে তাদের পদচিহ্ন বিভিন্ন অলিতে গলিতে।
তথ্যঃ গুগল