বেলিজ সম্পর্কে বিস্তারিত
- ইয়াসিন প্রধান সাজিদ
- মে ৮, ২০২১
মধ্য আমেরিকার মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর এবং দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে একটি স্থান হলো বেলিজ। বেলিজ শহরে প্রচুর পরিমাণে পর্যটকদের উপস্থিতি দেখা যায়। বেলিজ এমন একটি স্থান যে শহরটি সারা বিশ্বে একটি সেরা ভ্রমণ স্থান হিসেবে তার নাম লিখিয়ে নিয়েছে। বেলিজ শহরটি মধ্য আমেরিকার উত্তর-পূর্ব অংশে, ক্যারিবীয় সাগরের উপকূলে অবস্থিত একটি রাষ্ট্র। এই অপরুপ বেলিজ শহর মধ্য আমেরিকার সবচেয়ে ক্ষুদ্র ও স্বল্পবসতিপূর্ণ দেশগুলির একটি।
আরো পড়ুনঃ গরমে আপনার শিশুর যত্ন নিন
শহরের উত্তরে মেক্সিকো, পশ্চিমে ও দক্ষিণে গুয়াতেমালা এবং পূর্বে ক্যারিবীয় সাগর। বেলিজ দেশটির তটরেখার দৈর্ঘ্য ২৮০ কিলোমিটার। উপকূল থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরত্বে সমুদ্রের মধ্যে একটি প্রবাল বাধ আছে, যার নাম বেলিজ প্রবাল বাধ। বেলিজের পর্যটকদের জন্য ছোট একটি দর্শনীয় স্থান বেলিজের এমন সকল স্থানগুলো। বেলিজের প্রাকৃতিক দৃশ্যই মূলত পর্যটকদের অনেক বেশি আকর্ষন করে।
বেলিজের দক্ষিণ অংশটিতে একটি সরু উপকূলীয় সমভূমি আছে, যার পাশে হঠাৎ অনেক উঁচু পাহাড় ও পর্বত উঠে গেছে; পার্বত্য অঞ্চলটির নাম মায়া পর্বতমালা। দেশের তিন-চতুর্থাংশ এলাকা অরণ্যে আবৃত। আর এই সকল দৃশ্যগুলোও বেলিজের পর্যটকদের জন্য অনন্য একটি আকর্ষন। সারা বিশ্বের কাছে পরিচিত এই বর্তমান বেলিজ এলাকাটি অতীতে মায়া সভ্যতার অংশ ছিল। মায়ারা ছিল দক্ষ কৃষক, তারা তখনকার যুগের সবচেয়ে অগ্রসর একটি সভ্যতা নির্মাণ করেছিল। তাদের হাতের যেকোনো কাজ ঐ ছিল আকর্ষনীয় এবং অনেক সূক্ষ। তাই তাদের দ্বারা তখন অনেক অপরুপ নিদর্শন তৈরী হয়েছিল যেগুলো এখন শুধু স্মৃতি এবং দর্শনীয় বিষয়বস্তু। তারা অনেক কারুকার্যময় মন্দির নির্মাণ করে।
আরো পড়ুনঃ গরমে পানিশূন্যতা এক ভয়াবহ রূপ ধারণ করে!
মায়া সভ্যতার প্রাচীন নগরগুলির ধ্বংসাবশেষ দেখতে অনেক পর্যটক এখন বেলিজে বেড়তে আসে। দেশটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, বন্যপ্রাণীর বৈচিত্র্য ও মনোরম সৈকতগুলিও পর্যটকদেরকে আকৃষ্ট করে। বলা চলে বেলিজ শহরে পর্যটকদের সকল ধরনের চাহিদা মেটানোর জন্য ব্যবস্থা রয়েছে। পর্যটকদের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের বিভিন্ন রুচি দেখা যায়৷ তাই বেলিজ শহরে অন্য শহরের তুলনায় অনেক বেশি পর্যটকের উপস্থিতি দেখা যায়। বেলিজের অর্থনীতি বনজ, মাছ ধরা, পর্যটন এবং কৃষির উপর ভিত্তি করে। প্রধান অর্থনৈতিক ক্রিয়াকলাপ মূলত মেহগনি মূল্যবান কাঠের নিষ্কাশন।
বেলিজ উপকূলে প্রচুর মাছের মজুদ রয়েছে। আর এসকল খাত থেকেও বেলিজের অনেক আয় হয় বলে জানা যায়। তাদের দেশের অর্থনীতি সচল ই আছে এসকল উৎসের উপর। প্রতি বছরের হিসাবে খাতগুলো থেকে পুরো দেশকে পরিচালনার মতো আয় করা হচ্ছে। দেশটিতে বাৎসারিক হিসেবে প্রচুর পর্যটকের আগমন লক্ষ্য করা যায়। বেলিজ শহরে প্রতি বছর প্রায় ৩০০.০০০ আন্তর্জাতিক পর্যটক দেশটি পরিদর্শন করে, বেলিজ বিশেষত ডাইভার এবং সার্ফারের সাথে জনপ্রিয়।
রিফ উপকূল ছাড়াও, দেশে অন্যান্য পর্যটকদের আকর্ষণ রয়েছে, যেমন অরেঞ্জ ওয়াকের মায়ান ধ্বংসাবশেষ, কেয়ে কুলকার দ্বীপ, বেলিজ সিটি শহর বা রাজধানী বেলমোপন। আর এসকল স্থান ও দৃশ্যগুলোর টানে দেশ বিদেশের পর্যটকরা ছুটে আসে বেলিজ শহরে এবং তাদের ভ্রমন চাহিদা মিটায় তৃপ্তি সহিত। দেশের বৃহত্তম শহরটি প্রায় ৭০.০০০ বাসিন্দা সহ বেলিজ সিটি। ১৯৬১ সালে উপকূলের সান্নিধ্যের কারণে শহরটি একটি হারিকেন দ্বারা প্রায় সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হওয়ার পরে, সরকারের আসনটি নতুন রাজধানী বেলমোপনে স্থানান্তরিত হয়। তবুও, বেলিজ সিটি এর বৃহত বন্দরটির কারণেও দেশের অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসাবে রয়ে গেছে।
নগরীর প্রধান আকর্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে হ্যালোভার ক্রিকের বেলিজ সুইং ব্রিজ, মেরিটাইম মিউজিয়াম, আর্ট মিউজিয়াম, কলোনিয়াল সিটি হল, কুইন স্ট্রিট ব্যাপটিস্ট চার্চ, পুরানো মার্কিন দূতাবাস, সেন্ট জনস ক্যাথেড্রাল।
আরো পড়ুনঃ মজাদার ফুলকপির ভুনা ভর্তা
- মধ্য আমেরিকার প্রাচীনতম অ্যাংলিকান গির্জা, বেলিজ চিড়িয়াখানা, ফোর্ট জর্জ জেলা এবং ফোর্ট জর্জ হারবারের বাতিঘর। মূলত বেলিজ শহরে এই স্থানগুলো হলো বহুল পরিচিত এবং আলোড়ন সৃষ্টিকারী স্থান তাই এগুলো হলো প্রধান আকর্ষন এবং এগুলো ছাড়াও দেশের আনাচে কানাচে রয়েছে অনেক স্থান যেগুলো পর্যটকরা খুজে খুজে উপভোগ করতে থাকে। তবে অনেক জায়গাগুলো নতুন করে নতুন কিছুর ছোয়া দেয়। তাই এই জায়গার আকর্ষন বেড়ে যায় আরও অনেক টা। আর এজন্যই পর্যটকরা অন্য দেশ থাকতেও এ দেশকে বেছে নেয়।
তথ্যঃ গুগল